করোনা আক্রান্ত নার্সের আর্তনাদ : আমি কি না খেয়ে মারা যাবো? - পূর্বকন্ঠ

শিরোনাম :

শুক্রবার, ১ মে, ২০২০

করোনা আক্রান্ত নার্সের আর্তনাদ : আমি কি না খেয়ে মারা যাবো?



করোনা আক্রান্ত নার্সের আর্তনাদ : আমি কি না খেয়ে মারা যাবো?

নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত খুলনা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র নার্স ও নার্সিং সুপারভাইজার শিলা রানী দাসের পরিবার সমাজপতিদের নিগ্রহের শিকার হয়েছেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লোকদের দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছে তার পরিবার। এমনকি জোরপূর্বক বাড়ি লকডাউন করে তার খাবারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে— মর্মে তিনি নিজেই অভিযোগ করেছেন।
তিনি খুলনা করোনা হাসপাতালে (ডায়াবেটিক হাসপাতাল) কর্তব্যরত ছিলেন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আমার সমাজের কাছে প্রশ্ন: আমি রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি, এখানে আমার অপরাধটা কোথায়? আমি কি কোনো অপরাধী? যে আমাকে খাবারটা পর্যন্ত দেয়া যাবেনা! আমি কি- না খেয়ে মারা যাবো? এ কেমন বিচার?’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সিনিয়র নার্স শিলা রানী দাসের করোনা ধরা পড়ে। যিনি গত ৪ এপ্রিল থেকে খুলনা করোনা হাসপাতালে (ডায়াবেটিক হাসপাতাল) কর্তব্যরত ছিলেন। আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে ওই হাসপাতালেই রাখা হয়েছে। তিনি নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এমএ বারী সড়ক, সিএসএস রেভা পলস স্কুলের পশ্চিম পাশের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার খুব কষ্ট লাগছে আমাদের এলাকার কমিশনারসহ কিছু লোকের কর্মকাণ্ড শুনে। আমি যখন করোনা হাসপাতালে ভর্তি হই তখন তারা আমার বাসার কাজের লোকের বাসা লকডাউন করছে, ঠিক আছে! কিন্তু আমি একজন নিরামিষভোজী, আমার বাড়ির মানুষজন বলেছে আমার খাবারের ব্যবস্থা করতে, আমি নিজেও বলেছি.. কিন্তু তারা মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিয়েছে! আমার সমাজের কাছে প্রশ্ন আমি রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছি এখানে আমার অপরাধটা কোথায়? আমি কি কোনো অপরাধী যে আমাকে খাবারটা পর্যন্ত দেয়া যাবেনা! আমি কি না খেয়ে মারা যাবো? এ কেমন বিচার? কারা এদেরকে এলাকার মানুষের দেখা শোনার ভার দিয়েছে?’
এ বিষয়ে শিলা রানী দাসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জেলা প্রশাসন থেকে আমার বাড়ি বা কাজের লোকের বাড়ি লকডাউন করা হয়নি। ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ৩ জন ঘনিষ্ট লোক এই লকডাউন করেছে। ওয়াহিদ ও তৌফিক নামে দুইজন কাউন্সিলরের নাম ভাঙিয়ে বাসায় খাবার দিতে দিচ্ছে না। বাসায় আমার মেডিক্যাল পড়ুয়া মেয়ে না খেয়ে আছে।
তবে, বিষয়টি অস্বীকার করে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনি জানান, আমি ওই নার্সের মেয়েকে বুধবার বাসায় গিয়ে সান্তনা দিয়ে এসেছি, খাবারের জন্য তার কাছে কেউ ফোন করেনি। কাজের লোকের বাসা লকডাউন করলে পুলিশ প্রশাসন করেছে, তিনি জানেন না।
এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবীর পিপিএম বলেন, ‘ওই নার্সের পরিবারকে হয়রানির বিষয়টি আমি জানতাম না। এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

খুলনা/নূরুজ্জামান/বুলাকী


from Risingbd Bangla News https://ift.tt/3aQfr6b
via IFTTT

কোন মন্তব্য নেই: