
‘বন উজাড়ে বাড়ছে সংক্রামক ব্যাধির ঝুঁকি’
নিউজ ডেস্কবন জঙ্গল ঢালের মতো মানবজাতিকে সংক্রামক ব্যাধি থেকে রক্ষা করে৷ বনাঞ্চল উজাড়ে সেই ঢাল যখন আর থাকে না,তখন বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক পরিণতি নেমে আসে৷ বিজ্ঞানীরা গত অন্তত দুই দশক ধরে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছেন৷
তারা বলেছেন, মানুষ যত সীমা লঙ্ঘন করে বনে প্রবেশ করবে, বুনো প্রাণীদের হওয়া নানা রোগ তত বেশি মানবজাতিকে সংক্রমিত করবে৷ এ কারণেই চীনরে উহানে নতুন একটি করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর একটুও অবাক হননি ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব মাতো গ্রাসো-র ইকোলোজিস্ট আনা লুসিয়ে তোউরিনহো৷ তিনি পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হলে কিভাবে বন এবং সমাজ অসুস্থ হয়ে পড়ে তা নিয়ে গবেষণা করেছেন৷
তিনি বলেন, ‘যখন কোনো নতুন ভাইরাস সেটির প্রাকৃতিক আবাস ত্যাগ করে মানুষের দেহে প্রবেশ করে তখন ভীষণ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ নতুন করোনা ভাইরাস সেটাই আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে৷’
লুসিয়ে জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস যখন নিজের উৎসস্থলে অর্থাৎ বিশেষ করে গভীর জঙ্গলে আবদ্ধ থাকে তখন সেটি মানবজাতির জন্য একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণ নয়৷ কিন্তু বন উজাড় করলে সমস্যার শুরু হয়৷ গভীর জঙ্গলের ভাইরাস তখন মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগেই বেশ কয়েকটি গবেষণায় বন উজাড়ের কারণে বাদুড়ের বাসা নষ্ট হওয়া এবং সেখান থেকে অজানা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল৷ পোল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারশর গবেষক আনিতা আফেল্ট তার গবেষণায় মারাত্মক সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব এশিয়া মহাদেশ ছড়ানোর আভাস দিয়েছিলেন৷ কারণ গত ৪০ বছরে এশিয়া মহাদেশে মারাত্মকভাবে বন উজাড় হয়েছে৷
২০১৮ সালে একটি গবেষণাপত্রে আফেল্ট লিখেছিলেন, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া (এসইএ)—তে সব থেকে বেশি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানকার সিংহভাগ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা বলতে কিছু নেই। তার ওপর সেখানে নির্বিচারে বন উজাড় করা হচ্ছে৷ কোনও অঞ্চলে নতুন কোনও সংক্রামক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব বা পুরনো সংক্রামক ব্যাধি নতুন করে ছড়িয়ে পড়ার সবরকম শর্ত এই অঞ্চলে স্পষ্ট৷
ব্রাজিলের ইকোলোজিস্ট আনা লুসিয়ে তোউরিনহো তার গবেষণাপত্রে লিখেছিলেন, গভীর জঙ্গল আসলে ঢালের মতো৷ এই ঢাল মানবজাতির সঙ্গে বন্য প্রাণীর সংস্পর্শ আটকায়। বন্যপ্রাণী অনেক ধরণের অজানা জীবাণু বহন করে। বনভূমি কেটে ধ্বংস করলে সেসব ভাইরাস আমাদের শরীরে সংক্রমণ ঘটায়। বন্যপ্রাণী থেকে ছড়ানো এমন অনেক অজানা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার কোনও রাস্তা মানবজাতি খুঁজে পায় না।
সূত্র: ডয়চে ভেলে, জি নিউজ
/সাইফ/
from Risingbd Bangla News https://ift.tt/2St4Ojr
via IFTTT
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন