যৌক্তিকতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে’ ১০ম গ্রেড দাবি করেছে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা। এ দাবিতে গত ২৮ নভেম্বর অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছে ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ’।
তবে বিষয়টি এখনই বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. উত্তম কুমার দাশ।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) এ বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে আমরা অবগত। তবে সম্প্রতি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। এরপর ধারাবাহিকভাবে তাদের গ্রেড উন্নীত হবে।’
সহকারী শিক্ষকরা তাদের আবেদনে লিখেছেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড আর ভিত্তি হলো প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষকরা শিক্ষার সূতিকাগারের কাণ্ডারি। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে ‘Let's Talk With Sheikh Hasina’ টিভি অনুষ্ঠানের একটি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, উনার স্বপ্ন ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া। তিনি এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়।
দেশ উন্নয়নশীলতার কাতারে, মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ মার্কিন ডলার। প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বদা আন্তরিক তাইতো তিনি বলেছিলেন, শিক্ষায় বরাদ্দ নয় বিনিয়োগ। শিক্ষকদের স্বপ্ন ও বুকভরা আশা, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের হতাশ করবেন না দৃঢ় বিশ্বাস।
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের যৌক্তিকতা তুলে ধরে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর তারা লিখেছেন, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক সমমান (২য় বিভাগ) বেতনগ্রেড ১৩তম। সমযোগ্যতা সম্পন্ন অন্যান্য বিভাগে; মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক সমমান, বেতনগ্রেড ১০ম।
পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক বা সমমান বেতনগ্রেড ১০ম। নার্সদের নিয়োগ পদে যোগ্যতা এইচএসসি (ডিপ্লোমা ইন নার্সিং), বেতনগ্রেড ১০ম। উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পদ নিয়োগ যোগ্যতা এসএসসি (৪ বছর কৃষি ডিপ্লোমা), বেতনগ্রেড ১০ম। ইউনিয়ন পরিষদ সচিব পদে নিয়োগ যোগ্যতা আগে ছিল এইচএসসি বর্তমানে স্নাতক সমমান, বেতনগ্রেড ১০ম (প্রস্তাবিত)। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক সমমান, বেতনগ্রেড ১০ম ও ৯ম।
এ ছাড়া একই ক্যারিকুলাম, একই সিলেবাস ও একই শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক (দ্বিতীয় শ্রেণি), দেড় বছরের ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন (ডিইনএড), বেতনগ্রেড ১০ম।
সুতরাং প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের যোগ্যতা স্নাতক (২য় বিভাগ) সমমান হলেও ১০ম গ্রেড পেতে শুধুমাত্র আমলাতান্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা- এমনটাই দাবি তাদের।
আবেদনে শিক্ষকরা আরও লিখেছেন, প্রাথমিক শিক্ষক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উন্নত জীবনের স্বপ্নদর্শনে উদ্বুদ্ধ করেন পড়াশুনা শেষ করে মহৎ পেশায় নতুন নিয়োগ পাওয়া একজন শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে ১১ হাজার টাকা বেতনে হতাশা ও মনোকষ্ট নিয়ে যাপিত জীবন অতিবাহিত করছেন। অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের স্নাতক সমমান ডিগ্রীধারীদের কততম গ্রেডে বেতন দেওয়া হচ্ছে তা পর্যালোচনা করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১০ম নির্ধারণ করা সময়ের দাবি।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মাহবুবর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নিয়োগ যোগ্যতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড দাবির পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র সদয় অনুগ্রহ কামনা করছি।’
এ বিষয়ে ড. উত্তম কুমার দাস বলেন, ‘পুরো প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হবে নীতিমালা অনুযায়ী। এক্ষেত্রে নিয়মের বাইরে গিয়ে গ্রেড বাড়ানোর সু্যোগ নেই।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন