বাম জোটের হরতালে জনগণ বিন্দুমাত্র সাড়া দেয়নি বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, হরতাল আহ্বানকারীদের লজ্জা হচ্ছে কি না তিনি জানেন না। তবে তাঁদের জন্য তাঁরই লজ্জা হচ্ছে।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ সোমবার সারা দেশে অর্ধদিবস হরতাল পালন করেছে বামপন্থী দলগুলোর মোর্চা বাম জোট। রাজধানীর পল্টন, শাহবাগসহ কয়েকটি এলাকার সড়কে হরতালকারীরা অবস্থান নিলেও শহরের অন্যান্য সড়কে যান চলাচল ছিল। ঢাকায় আজকে যানজটও হয়েছে।
বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের ১৮ বছরে পদার্পণ উৎসবে যোগ দিয়ে হরতালের বিষয়ে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
বাম জোট হরতালের ডাক দিলে তাতে সমর্থন জানিয়েছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু প্রবাসীদের দেওয়া একটি পুরস্কার গ্রহণসহ পারিবারিক কারণে দুই দিন আগে তিনি যুক্তরাজ্যে গেছেন।
বক্তব্যে তাঁর এই বিদেশ সফরের প্রসঙ্গ তোলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী হরতাল ডেকেছিলেন। কিন্তু তিনি লন্ডনে চলে গেছেন।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘বাম জোটের হরতালে রাজধানীতে যানজট দেখা গেছে। যারা হরতাল ডেকেছে, তাদের লজ্জা হচ্ছে কি না জানি না। তাদের জন্য বরং আমারই লজ্জা লাগছে যে হরতালে জনগণ বিন্দুমাত্র সাড়া দেয়নি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনার কারণে সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। বাংলাদেশেও আমদানিনির্ভর কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকার স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে কম দামে পণ্য বিক্রি করার ব্যবস্থা করেছেন। ইতিমধ্যে এক কোটি পরিবারকে কার্ড দিয়েছেন, তাতে জনগণের মধ্যে স্বস্তি এসেছে। তিনি বলেন, ‘যেসব অসাধু ব্যবসায়ীকে বিএনপি ভেতরে ভেতরে তাল দিয়েছিল, তাঁরাও প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগের কারণে তাঁদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পারেননি।’
‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রকৃতপক্ষে সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিল। মানুষের বাধায় ফেরত এসেছিল। পরবর্তী সময়ে ২৭ মার্চ তাকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করানো হয়।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
চট্টগ্রামের কালুরঘাটে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা ইতিহাসকে বিকৃত করছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও যারা ইতিহাস বিকৃত করছে, তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।’
এ সময় সাংবাদিকেরা চট্টগ্রামের কালুরঘাটে বিএনপির সমাবেশ করতে চাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কালুরঘাটে কী জন্য সমাবেশ? ইতিহাস বিকৃত করার জন্য?’
এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রকৃতপক্ষে সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিল। মানুষের বাধায় ফেরত এসেছিল। `পরবর্তী সময়ে ২৭ মার্চ তাকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা পাঠ করানো হয়।’
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের কর্মকাণ্ড নিয়ে তৎকালীন পাকিস্তানি কর্নেল একটি চিঠি লিখেছিলেন। পরবর্তী সময়ে ওই কর্নেল পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হয়েছিলেন। তিনি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘তাঁর (জিয়াউর রহমান) কর্মকাণ্ডে পাকিস্তানিরা খুশি এবং স্ত্রী-পুত্র নিয়ে যেন কোনো চিন্তা না করেন। `প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে জিয়াউর রহমান ছিলেন “পাকিস্তানিদের গুপ্তচর”।'
from প্রথম আলো https://www.prothomalo.com/politics/হরতালকারীদের-জন্য-লজ্জা-পাচ্ছেন-তথ্যমন্ত্রী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন