প্রথম দিনে সমানে-সমান - পূর্বকন্ঠ

শিরোনাম :

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২

প্রথম দিনে সমানে-সমান

গোধূলি লগ্নে চিকচিক করতে থাকা নতুন বল পেয়ে গোটা দলের শরীরিক ভাষাই পাল্টে গেল! পুরনো বলে তাইজুল শেষ বিকেলে বাভুমা ও রিকেলটনের ৮৩ রানের জুটি ভাঙার পর দল বুঝে গিয়েছিল আরেকটি সাফল্য পাওয়া যাবে। অধিনায়ক মুমিনুল খালেদের হাতে ওভারের মাঝেই তুলে দেন নতুন বল। 
ডানহাতি পেসার মান রেখেছেন দিনের শুরুর মতো। তেম্বা বাভুমাকে ২২ গজে কঠিন সময় দিলেন। ডানহাতি পেসারের একেকটি বল ছেড়ে শেষ বিকেল কোনোমতে পার করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ফিফটি পাওয়া বাভুমার। কিন্তু লাফিয়ে উঠা বলটায় কোনোমতেই ব্যাট সরাতে পারেননি। ব্যাটে চুমু খেয়ে বল যায় স্লিপে। সেখানে দারুণ ক্যাচ নিলেন শান্ত। বাংলাদেশ পেয়ে গেল প্রোটিয়াদের পঞ্চম উইকেট। 

এর আগে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে টস জিতে ব্যাটিং করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিন শেষে দলটির সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৭৮ রান। শেষ বিকেলে ক্রমাগত আক্রমণে দুই উইকেট আদায় করে বাংলাদেশও আছে লড়াইয়ে। পোর্ট এলিজাবেথে প্রথম দিনের লড়াইটা তাই সমানে সমান থাকল। 

দিনের শেষটা খালেদ যেমন রাঙিয়েছেন, শুরুটাও হয়েছিল তার হাত ধরে। দিনের তৃতীয় ওভারে সাফল্য পেয়ে যাওয়ার সব কিছুই করেছিলেন তিনি। একটু ভেতরে ঢোকানো বলে পরাস্ত সারেল এরইউ। `বাংলাদেশের জোরালো আবেদন ফিরিয়ে দেন আম্পায়ার আল্লাহুদিন পালেকার।'

খালেদ নিজের উইকেটের জন্য বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। দ্রুতই রিভিউয়ের কথা বলেন মুমিনুলকে। নিজের পেসারের ওপর আত্মবিশ্বাস রেখেছিলেন মুমিনুল। রিভিউ প্রায় চেয়েও বসেছিলেন। কিন্তু পেছন থেকে কেউ ডেকে মুমিনুলকে রিভিউ নিতে মানা করেন। মুমিনুল পরে যান দ্বিধায়। তবুও আগ্রহ দেখান বাংলাদেশের দলপতি। হাত তুলে ইশারা করেছিলন আম্পায়ারকে। `কিন্তু ততক্ষণে ১৫ সেকেন্ড পেরিয়ে যায়।'

টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল ঠিকঠাক মতো উইকেটে পিচ করে স্ট্যাম্পে আঘাত করছে। এই রিভিউ নিলে বাংলাদেশ ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই পেয়ে যেতো সাফল্য। আরও একবার রিভিউ নিতে সাহস করেননি মুমিনুল। প্রথম টেস্টেও এমন ঘটনা ঘটেছে অহরহ। তবে ১২তম ওভারে তার হাত ধরেই আসে প্রথম সাফল্য। তার অফস্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ২৪ রানে আউট হন এরইউ। 

সকালের সেশনে ওপেনিং জুটি ভাঙার পর আর কোনো উইকেট পায়নি বাংলাদেশ। এ সময়ে ২৮ ওভারে ১০৭ রান তুলে প্রোটিয়ারা এগিয়ে যায়। বিরতির পর একাদশে ফেরা তাইজুল হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের ভরসা। নিখুঁত লাইন ও লেন্থ ধরে রেখে টানা বোলিং করে যান। চাপে রেখেছিলেন এলগার ও পিটারনেসকে। তাতে মিলে যায় সাফল্য। চমৎকার এক ডিলিভারীতে প্রোটিয়া অধিনায়ক এলগারকে কট বিহাইন্ড করান। সিরিজে টানা তিন ইনিংসে পঞ্চাশ ছুঁয়েও ৭০ রানে বিদায় নেন। এরপর পিটারনেস ও বাভুমা ৫১ রানের জুটি গড়লেও তাইজুল তাদের রান বড় হতে দেননি। এবার আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বাংলাদেশ আদায় করে নেয় পিটারসেনের উইকেট। মিডল স্টাম্পেরের উপরের বল ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন পিটারসেন। বল আঘাত করে তার প্যাডে। বাংলাদেশের আবেদনে শুরুতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউতে পাল্টায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত। 

দ্বিতীয় সেশনে তাইজুলের জোড়া আঘাতে দুই উইকেট পেলেও বাকিরা আঁটসাঁট বোলিংয়ে তেমন কিছু করতে পারেননি। এ সময়ে অফুরন্ত রান তুলেছেন বাভুমা ও রিকেলটন। তাইজুল দিনের শেষ সময়ে ভাঙেন এ জুটি। তাকে রিভার্সসুইপ করতে গিয়ে স্লিপে ইয়াসিরের হাতে ক্যাচ দেন রিকেলটন। আম্পায়ার এরাসমান এবারও বাংলাদেশের আবেদনে সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে বাংলাদেশ পেয়ে যায় আরেকটি উইকেট। শেষমেশ খালেদের ওই ম্যাজিকাল ডেলিভারী বাংলাদেশকে নিয়ে আসে কক্ষপথে। পাঁচ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ এখন অন্য চেহারায়। `বোলিংয়ে শক্তিশালী এবং সংগঠিত। সঙ্গে ফিল্ডিং ক্ষিপ্রতায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়তে দেয়নি মমিনুল হকের দল।' 

from RisingBD - Home https://www.risingbd.com/প্রথম-দিনে-সমানে-সমান/453239
via IFTTT

কোন মন্তব্য নেই: