কুমিল্লা সিটি ছাড়েননি এমপি বাহার, সিইসি ‘অসহায়’ - পূর্বকন্ঠ

শিরোনাম :

রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

কুমিল্লা সিটি ছাড়েননি এমপি বাহার, সিইসি ‘অসহায়’

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে চিঠি দেওয়ার পরও কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার কুমিল্লা সিটির নির্বাচনি এলাকায় না ছাড়ায় গণমাধ্যমের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার  (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ইসি’র চিঠি পাওয়ার পরও একজন সংসদ সদস্য সেই নির্দেশনাকে সম্মান না জানালে কমিশনের তেমন কিছু করার নেই— এমনটিই বলছেন সিইসি।

রোববার (১২ জুন) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাবেক সিইসি, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবদের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এমন কথা বলেন।,

এমপি বাহারকে নির্বাচনি এলাকা ছাড়তে বলে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের কিছু আইনি ক্ষমতা আছে। কিছু ক্ষমতা আংশিক, কিছু ক্ষমতা পরিপূর্ণ। যেমন— কোনো কোনো নির্বাচনে আমরা প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারি, আবার কোনো নির্বাচনে তা পারি না।,

সিইসি বলেন, কুমিল্লার বিষয়ে আমাদের যে আচরণবিধি আছে, সেখানে বলা হয়েছে— অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনি এলাকায় থাকবেন না এবং এলাকায় থেকে কোনোভাবেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন না বা প্রচারণা চালাবেন না। কুমিল্লার সংসদ সদস্য তেমনটিই করছিলেন বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছিল। আমরা সে অনুযায়ী আমাদের এখান থেকে তাকে চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে তাকে স্থান (নির্বাচনি এলাকা) ত্যাগ করতে বলেছি। তিনি এলাকা ত্যাগ করেননি। আমরা শুনেছি, তিনি আদালতে মামলা করেছেন। আমরা এটি শুনেছি, ঠিক হতে পারে। মামলার ফলাফলটা না পেলে...।,

কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, তাছাড়া আমরা যখন কাউকে রিকোয়েস্ট করি, আমাদের এমন কোনো ক্ষমতা নেই কাউকে জোর করে... (বের করে দিতে পারি)। তিনি একজন সংসদ সদস্য, তাকে বলাটাই যথেষ্ট। তাকে আমরা বলেছি— আচরণবিধিতে এটি আছে, আপনি কাইন্ডলি একটু সরে থাকলে নির্বাচনটা ভালো হয়। সেই চিঠিটি আমরা প্রকাশ্যে দিয়েছি। এটিই একজন সংসদ সদস্যের জন্য যথেষ্ট। একজন সংসদ সদস্যের জন্য সেটিকে অনার করা (উচিত)। যদি তিনি সেই অনার না করেন, আমাদের তেমন কিছু করার থাকে না।,

এর আগে, গত ৮ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে নির্বাচনি এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল ইসি। উপসচিব মো. আতিয়ার রহমানের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিটি করপোরেশন (নির্বাচনি আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর ২২ বিধি অনুযায়ী সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নির্বাচনি এলাকায় প্রচারণায় বা নির্বাচনি কার্যক্রমে অংশ নিতে পারেন না। সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল ভোট দেওয়ার জন্য ওই এলাকায় যেতে পারবেন।,

জানা গেছে, ইসির নির্দেশনার পরও সংসদ সদস্য বাহার তার নির্বাচনি এলাকায় অবস্থান করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও গণমাধ্যমগুলোতেও এমন খবর প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে কুসিক নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে শনিবারও (১১ জুন) অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনি বিধিমালা লঙ্ঘন করে সিটি করপোরেশনের অধীন এবং সংলগ্ন বিভিন্ন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা করার নির্দেশ দিয়েছেন এমপি বাহার। একইসঙ্গে সিটির অধীন বিভিন্ন মসজিদের ইমামদেরও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।,

তফসিল অনুযায়ী কুমিল্লা সিটির ভোট আগামী ১৫ জুন।  এবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোট নেওয়া হবে। সিটিতে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন।,

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে দুই নির্বাচনেই মেয়র পদে নির্বাচিত হন মনিরুল হক সাক্কু। প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং দ্বিতীয়বার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এবার ফের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। ‘এছাড়া আরেক বিএনপি নেতা নিজামুদ্দিন কায়সারও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন।,

from  Sarabangla https://ift.tt/URr1iln

কোন মন্তব্য নেই: