ঢাকা: বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বাড়তি থাকার কারণে গত বছর থেকেই বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের ( বিপিসি) লোকসান শুরু হয়। সেই লোকসান বাড়িয়ে দেয় রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ। বর্তমানে বিপিসির লোকসানের পরিমাণ ঠেকেছে দৈনিক ১শ কোটি থেকে ১১০ কোটি টাকায়।,
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত বিপিসিকে লোকসান গুণতে হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। ফলে গত সাত বছর ধরে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটি যে মুনাফার মুখ দেখেছিল তা হুমকির মুখে। বিপিসির এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আজ সোমবার (২৭ জুন) সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জ্বালানি বিভাগ।,মহামারি করোনাভাইরাসের ধকল কাটিয়ে বিশ্ব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকলে হঠাৎই বেড়ে যায় জ্বালানির দাম। আগের বছরের অপরিশোধিত তেলের ৬৫ ডলার মূল্যের ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। সাধারনত ৮০ ডলার ছাড়িয়ে গেলে বিপিসির লোকসান গুণতে হয়। তখন ওই পরিস্থিতিতে গত বছর নভম্বরে সরকার দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করে। এরপর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে তেলের বাজার আরো তেঁতে উঠে। হু হু করে বাড়তে থাকে জ্বালানি তেলের দাম। ৬৫ ডলার মূল্যের প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম মার্চে ১২৪ ডলারে পৌঁছায়। বিশ্ববাজারে জ্বালানির এই ঊর্ধ্বগতি বিপিসির লোকসান বাড়িয়ে দেয়। জানুয়ারিতে থাকা দৈনিক ২০ কোটি টাকার লোকসান জুনে এসে ১১০ কোটিতে ঠেঁকেছে বলে জানা গেলো প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদের কথায়। তিনি বলেন, গত সাত বছরে বিপিসি টানা লাভে ছিল, কিন্তু গত এক বছরে তা তলানিতে ঠেঁকেছে। এখন প্রতিদিন ১০১ কোটি থেকে ১১০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।,
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, ভর্তুকির কারণে বছরের পর বছর লোকসানে থাকা বিপিসি ২০১৪ সাল থেকে মুনাফার মুখ দেখতে শুরু করে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার পরিমান দাঁড়ায় ৪৭ হাজার কোটি টাকায়। কিন্তু বিশ্ববাজারে তেলের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ২০২০-২১ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১ হাজার ২৬৩ কোটিতে নেমে আসে মুনাফা। এ পরিস্থিতিতে লোকসান ঠেকাতে জ্বালানির মূল্য সমন্বয় করার কথা ভাবছে জ্বালানি বিভাগ। গত মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছিলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দামের যে পরিস্থিতি তাতে জ্বালানির দাম সমন্বয় করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে সমন্বয় হলেও ভোক্তাদের জন্য সহনীয় পর্যায়েই থাকবে বলেও উল্লেখ করেছিলেন।,
সে ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৭ জুন) পরিবহনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক ডেকেছে জ্বালানি বিভাগ। বিদ্যুৎ ভবনে বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে থাকবেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।,
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ব্যবহার করা জ্বালানি তেলের ৭৩ শতাংশের বেশি ডিজেল। সড়ক, নৌ পরিবহন, কৃষিতে সেচ কাজ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ডিজেল ব্যবহৃত হয়। বিপিসির সুত্র মতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরনের ৩০ লাখ ৩৬ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। আর ৮ লাখ ৭০ হাজার টন আমদানি করা হয় অপরিশোধিত তেল।,
from Sarabangla https://ift.tt/ykKsS5E
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন