নেত্রকোনার দুর্গাপুরের ঝাঞ্জাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকার ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বদলী ও বিচার দাবীতে মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণ।
খবর পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান ঘটনাস্থলে আসলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ওই অভিযুক্ত শিক্ষিকা রাশেদা মমতাজ সেবা'কে বর্তমান কর্মস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারী শান্ত হয় ।,
স্থানীয় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, ওই শিক্ষক ২০১২ সনে অত্র বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই উনার চাল চলন নিয়ে আমরা বহুবার উপজেলা শিক্ষা অফিসে জানিয়েছি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকরা উনাকে কিছু বলতে গেলে দলীয় ক্যাডার দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। স্কুল চলাকালীন প্রায় সময়ই গেঞ্জি ও প্যান্ট পড়ে অফিস করতে দেখাগেছে।,
এমন আপত্তিকর পোষাক পড়ে স্কুলে না আসার জন্য প্রধান শিক্ষক বারণ করলে, তিনি নানা আপত্তিকর অভিযোগ দিয়ে উল্টো প্রধান শিক্ষককে হেয় করেন। এ নিয়ে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে নানা অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। রাশেদা মমতাজ কোন দিনই সঠিক সময়ে স্কুলে আসেননি। এবিষয়ে তাকে কেউ কিছু বললে আ‘লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অনেক জনকেই হেয় করিয়েছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ওই শিক্ষিকার চাল-চলন, কথা-বার্তা, পোষাক পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে সবকিছুই প্রশ্নবিদ্ধ। এলাকার কেউ যদি ওই শিক্ষককের স্কুলে আসা-যাওয়া এবং পোষাক পরিচ্ছদ নিয়ে কিছু বলেন, তাহলে ঐ ব্যক্তিকে থানায় মানহানিকর মামলা এবং আ‘লীগের নেতা দিয়ে হয়রানি করবেন বলে নানা ধরনের হুমকি দিতেন প্রতিনিয়ত।,
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এতোদিন ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারেনি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মহোদয়, এনিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে জানালে, উল্টো প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেই আপত্তিকর প্রশ্ন তুলে বিভিন্ন মহলের কাছে অভিযোগ করেন রাশেদা মমতাজ।
ওই শিক্ষককে ঝাঞ্জাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করা না হলে, ‘আমরা আমাদের কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের ওখানে পড়াশোনা করতে পাঠাবো না। আমাদের জানামতে, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বজলুল কাদের নেত্রকোনা জেলার মধ্যে একাধিকবার প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর তোপের মুখে আজকে রাশেদা মমতাজকে ওই বিদ্যালয় থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ, আমরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুল কাদের বলেন, সারাদেশের মতো বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেনীর পরিক্ষা চলছিলো। আমাকে জড়িয়ে রাশেদা মমতাজ, কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও পত্রিকায় নিউজ করিয়েছেন মর্মে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগন মঙ্গলবার সকালে আমার কাছে জানতে আসেন।
পরবির্ততে ওই শিক্ষক গন্যমান্য ব্যক্তি ও আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন গালমন্দ করতে থাকলে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। পরবর্তিতে অত্র বিদ্যালয় থেকে রাশেদা মমতাজকে অপসারনের দাবিতে শিক্ষার্থী, স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী মিছিল করতে থাকে।, এ খবর পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফজলুর রহমান স্যার এসে ওই শিক্ষককে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিলে স্থানীয়রা তাদের আন্দোলন থেকে সরে আসেন।,
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশেদা মমতাজ এর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের নানা অভিযোগ পেয়েছি। আজকে ওই শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং তাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জোর দাবী জানান। এলাকাবাসীর দাবী ও বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ওই শিক্ষককে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ ব্যাপারে ঝাঞ্জাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রাশেদা মমতাজ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।,’
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন