স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে মদনে স্বামীর বাড়িতে অনশন
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনার মদনে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবীতে এক গার্মেন্স নারী কর্মীর স্বামীর বাড়িতে দুইদিন যাবত অনশন করছেন। কোন আশ্বাস না পাওয়ায় সোমবার সকালে স্বামীর বসতঘরের আড়ায় উড়না পেঁচিয়ের আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে। উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের কেশজানী গ্রামে তাপস চন্দ্র বিশ্বাসের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার কেশজানী গ্রামের সুধাংশু বিশ্বাসের ছেলে তাপস চন্দ্র বিশ্বাস গাজীপুরে কাঁচা মালের ব্যবসা করার সুবাধে গার্মেন্টস কর্মী শেরপুর জেলার সদর উপজেলার কামারচর ইউপির ধোবলারচর গ্রামের নূর ইসলামের মেয়ে মিনা আক্তারের (২০) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে তাপস চন্দ্র বিশ্বাস নিজের পরিচয় আড়াল করে সুমন ইসলাম পরিচয় দিয়ে ২০১৮ সালে ১৩ ডিসেম্বর ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক মৌলভীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করে প্রায় তিন বছর ঘর সংসার করে। গত ৫ মাস আগে মেয়েটিকে কোন কিছু না বলেই সে বাড়িতে চলে আসে। গত ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সে গ্রামের বাড়ীতে এসে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এ সংবাদের প্রেক্ষিতে মেয়েটি বিয়ের এক দিন পর স্বামীর গ্রামের বাড়িতে আসলে তাকে মানসিক রোগী বলে পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। মদন থানার পুলিশ তাকে নেত্রকোনা সদর থানায় পাঠায়।এ দিকে স্বামী তাপস চন্দ্র বিশ্বাস তার ২য় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে বলে মিনা আক্তারের মোবাইলে মেসেজ পাঠায়। এরই প্রেক্ষিতে রোববার মিনা আক্তার কেশজানী স্বামীর বাড়িতে আসে। স্বামীসহ পরিবারের লোকজন তাকে গ্রহণ না করায় সে অনশনে বসে এবং এক পর্যায়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
অনশনরত মিনা আক্তার জানান, মুসলিম পরিচয় দিয়ে আমার সাথে ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক মৌলভীর মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হয়। দীর্ঘ ৩ বছর সংসার করার পর আমাকে ছেড়ে বাড়িতে এসে ২য় বিয়ে করে। বিয়ের খবর পেয়ে আমি আসলে আমাকে মানসিক রোগী বানিয়ে বিদায় করে দেয়। আমার মা বাবা এই খবর শুনে আমাকে বাবার সংসার থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে এখানে এসেছি। আমাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিলে আমি যাব না আমার লাশ যাবে। সে আমার গর্ভের ২টি সন্তানও নষ্ট করেছে।
২য় স্ত্রী সান্তা রানী নমদাস জানায়, সে মুসলিম, আমি হিন্দু, আমরার একবারই বিয়ে। মিনা দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে। আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করে এনেছে। আমি এখানেই থাকব।
অভিযুক্ত তাপস চন্দ্র বিশ্বাস বলে, মিনা আক্তারের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে যদি বিয়ের কাগজপত্র দেখাতে পারে তাহলে আমি তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করব।
ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সোমবার ছেলে এবং মেয়ে উভয়কেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মেয়েটি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে মানসিক রোগী বানিয়ে সদর থানায় কেন প্রেরণ করা হয়েছিল বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি সত্য নয়। সদর থানা থেকে তার পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে গেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন