পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
নেত্রকোনার পূর্বধলায় মোস্তফা ও রুবেল নামে দুই সহোদরকে চোর বলায় আলাল উদ্দিন (৩৫) নামের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরীকে মারধর করেছে ওই দুই সহোদর। গত মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পূর্বধলা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ইলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে এঘটনা ঘটে।
আহত আলাল উদ্দিন উপজেলার ইলাশপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে ও স্থানীয় ইলাশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী। তিনি বর্তমানে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপর দিকে ওই মোস্তফা ও রুবেল একই গ্রামের আরেক জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
আহত দপ্তরী কাম প্রহরী আলাল উদ্দিন জানান, তিনি প্রতিদিনের মতো গত ১০ জুলাই রাতে বিদ্যালয় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত অনুমান সাড়ে ৯টার দিকে তিনি দেখতে পান মোস্তফা ও রুবেল বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগের তার কেটে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চুরির উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের তালা ভাঙ্গে। এ সময় তিনি তাদেরকে জাপটে ধরেন ও ডাক চিৎকার শুরু করেন। তার ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে মোস্তফা ও রুবেল দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
পরে তিনি বিষয়টি বিদ্যালয়য়ের প্রধান শিক্ষককে জানালে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে অবহিত করেন। এক পর্যায়ে ঘটনার দুইদিন পর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির লোকজন গ্রাম্য সালিশে মোস্তফা ও রুবেলকে দায়ী করে আর্থিক জরিমানা করেন। এ ক্ষোভে ওই দিন দুপুরে মোস্তফা, রুবেল ও তার মা আলাল উদ্দিনকে তাদের বাড়ির পাশে একা পেয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাখেশ চন্দ্র সরকার জানান, একদিকে বিদ্যালয়ে চুরির চেষ্ঠা করেছে। অপর দিকে আমার লোককে মেরেছে বিষয়টি খুবই দুঃখ্যজনক। তাই আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। এদিকে দপ্তরী আলাল উদ্দিনের বাবা বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ছিদ্দিক তালুকদার ও পূর্বধলা সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি স্থানীয় ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম রামিম জানান, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য কামালসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে গ্রাম্য সালিশ হয়েছে। সালিশে ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে বিদ্যালয়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মোস্তফা ও রুবেলকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর পর আলাল উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করার বিষয়টি ন্যাক্কার জনক। দায়ীদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোস্তফার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ওই দিন রাতে কে বা কারা তার বাড়ির বিদ্যুত সংযোগ কেটে দিয়ে ছিল। আদৌ তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত না। আলাল আমাকে চোর বানিয়েছে তাই তাকে মেরেছি।
পূর্বধলা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন