{getBlock} $results={3} $label={রাজনীতি} $type={headermagazine}

শফিকুল আলম শাহীন : শব্দের পথে সমাজসেবার যাত্রী

শফিকুল আলম শাহীন—একটি নাম, যেখানে মিশে আছে শব্দের শক্তি আর সত্যের দীপ্তি। নেত্রকোনার পূর্বধলার পূর্ব মৌদাম গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে তাঁর জন্ম।

পূর্বকন্ঠ ডেস্ক : শফিকুল আলম শাহীন—একটি নাম, যেখানে মিশে আছে শব্দের শক্তি আর সত্যের দীপ্তি। নেত্রকোনার পূর্বধলার পূর্ব মৌদাম গ্রামের সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে তাঁর জন্ম। বাবা ছিলেন শিক্ষক, যিনি জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেছেন গ্রামবাংলার শিশুদের মনে; মা ছিলেন স্বপ্নময় গৃহিণী, যিনি চেয়েছিলেন ছেলে একদিন চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবে ।

ডাক্তার হওয়ার সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি, কিন্তু শফিকুল আলম শাহীন প্রমাণ করেছেন—মানুষকে সেবা করার আরেকটি পথ আছে; শব্দের শক্তি দিয়েও সমাজের অন্ধকার ভেদ করা যায়। শৈশবেই তিনি বুঝেছিলেন—শব্দ কেবল অক্ষরের বিন্যাস নয়, শব্দের ভেতর আছে বদলে দেওয়ার আগুন। সেই বোধই তাঁকে টেনে নেয় সাংবাদিকতার পথে। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি শুরু হয় তাঁর কলমযাত্রা।

জননেত্র আর আজকের কাগজ দিয়ে যে অভিযাত্রার সূচনা, তা পৌঁছায় আমার দেশ ও ইত্তেফাক-এর মতো জাতীয় দৈনিক পর্যন্ত। পত্রিকা বন্ধ হয়েছে, পথরোধ হয়েছে, হুমকী-ধমকী ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এসেছে —তবু তিনি থেমে থাকেননি। কলমকে সঙ্গী করে তিনি আবারও ফিরে দাঁড়িয়েছেন সত্যের প্রহরায়।

২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর আমার দেশ পুনঃপ্রকাশিত হলে তিনিও ফিরে আসেন আপন ঠিকানায়, যেন নদী ফিরে পায় তার চেনা স্রোতধারা।

সংবাদ সংগ্রহের মাঠেই সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি; নেতৃত্বেও রেখেছেন দৃঢ় পদচিহ্ন। দুইবার পূর্বধলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দুইবার সভাপতি, তারও আগে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন পূর্বধলা রিপোর্টার্স ক্লাব নামে একটি সংগঠন। যে প্রতিষ্ঠানের তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন সভাপতি। সব ভূমিকায় তিনি যেন সহকর্মীদের এক আস্থার প্রতীক।

২০১৪ সালে তাঁর হাত ধরেই যাত্রা শুরু করে পূর্বধলার দর্পণ—প্রথমে অনলাইন, পরে পাক্ষিক প্রিন্ট সংস্করণে। বর্তমানে পত্রিকাটির প্রকাশক ও সম্পাদক নোমান শাহরিয়ার হলেও এর ভিত্তি গড়ে দেন শাহীন।

২০১৬ সালে তিনি আবারো নতুন স্বপ্ন দেখেন—পূর্বকণ্ঠ নামে আরেকটি প্রকাশনা শুরু করেন, যা সাপ্তাহিক প্রিন্ট সংস্করণ হিসেবেও বহুদিন টিকে ছিল। তবে অনলাইন সংস্করণ আজও প্রাণবন্ত, তাঁর হাতেই রচিত হচ্ছে তার প্রতিটি অধ্যায়।

শফিকুল আলম শাহীন শুধু সাংবাদিক নন। তিনি প্রযুক্তির ভুবনেও খুঁজে পেয়েছেন নিজের পরিচয়। স্নাতক শেষে চাকরির পেছনে না ছুটে হয়েছেন ওয়েব ডেভেলপার। কলমের কালির সঙ্গে কীবোর্ডের অক্ষর, সংবাদ সংগ্রহের সঙ্গে সৃজনশীল নকশা—সব মিলিয়ে তিনি সময়ের বহুমাত্রিক প্রতিচ্ছবি।

ব্যক্তিজীবনে তিনি আহসান আরার জীবনসঙ্গী—তিনি একজন শিক্ষক, যিনি শিশুদের মনে জ্ঞানের আলো জ্বালান। বড় ছেলে আরিফুল হাসান সরকারি চাকরিতে কর্মরত, আর মেয়ে নওরিন আলম শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানের আলোয় এগিয়ে চলছে।

পরিবার তাঁর সৃজনশীলতা আর স্বপ্নেরই পরিপূরক হয়ে পাশে থেকেছে প্রতিটি পদক্ষেপে। সব মিলিয়ে মোঃ শফিকুল আলম শাহীন শুধু একজন মানুষ নন, তিনি এক আলোকবর্তিকা—যিনি সত্যকে আঁকড়ে ধরে, দায়িত্ব ও নেতৃত্বকে বুকে ধারণ করে, ‘সৃজনশীলতার দীপ্তিতে এগিয়ে চলেছেন নিরন্তর।,’


একটি মন্তব্য করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন