আবহমান বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের সমন্বিত ধারাকে সমুন্নত রেখে বরাবরই বাঙ্গালীরা পরোপকারী,অতিথি পরায়ন,আবেগ প্রবন,সহজ সরলতাকে আঁকড়ে রেখেছে। প্রচীন কাল থেকেই এরা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে বিশ্বাস করে প্রতারিত হয়েছে।
কখনো ইউরোপের আবার কখনো পাকিস্তানীদের কলোনী হিসাবে চরম শোষন আর নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। অবশেষে মুক্তি মিললেও শোষকের শোষনের অবসান হলো না।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু "শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের জনসেবায় কাজ করার তাগিদ দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনঃগঠনে সফল হলেও শেষ রক্ষা হলো না।এক অশুভশক্তি কতৃক বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলেন, অভিশপ্ত বাংলার যাত্রায় নানান ক্ষতবিক্ষত শাসকের দ্বারা শাসিত বাঙ্গালীর বাংলাদেশ এরশাদ সাহেবের শাসনামলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণে সৃষ্টি হয় "উপজেলা"।
যেখানে জনসেবায় জনপ্রশাসনের একজন এবং বিচার বিভাগের একজন কর্মকর্তাকে পদায়ন করে জনসেবা নিশ্চিত করার প্রয়াস শুরু হয়ে আজও তা চলমান।চলমান শাসন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এলেও নির্বাহী ক্ষমতায় যারা নিয়োজিত ছিলেন/আছেন, তাদের যাত্রায় নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় জনসেবাকে নিশ্চিত করে অমরত্ব লাভ করেছেন আবুবকর সিদ্দিক,সুদেব বাবু,হেলাল উদ্দিন,নমিতা দেসহ আরো অনেক জনবান্ধব কর্মকর্তাগন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটিই সত্য যে,সমকালীন এমন একজন কর্মকর্তার সরকারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক আইডি থেকে অনেককেই আনফ্রেন্ড করার কারনে বিদায় বেলার আবেগঘন স্টেটাসটি থেকে বঞ্চিত জনগন একটি ঐতিহ্যের সাক্ষী হতে পারল না।
কিন্তু কলংকের ইতিহাস আর অপরাধের প্রতীক হিসাবে পরিচিত বাস্তিল দুর্গকে জনগন ভুলবে না।মাত্র দু/একটি প্রহরীর কান্না জড়িত কমেন্টসই একমাত্র আর্শীবাদের সম্বল হলো। হায়রে বাঙ্গালি! বাঙ্গালী ঐতিহ্যের এতটাই শক্তি ? ইতিহাস সাক্ষী, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত এই সমস্ত কর্মকর্তাগনই সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতে যেয়ে জনসেবায় জনবান্ধবের পরিচয় দিয়ে জনগনের সাথে অন্তরের যোগসূত্র সুত্র স্থাপন করে হয়ে যান সমাদৃত,লাভ করেন অমরত্ব। আর যারা জনসেবার নামে জনগনকে অহরহ প্রতারিত করছেন তাদের বিচার নিশ্চিত করে চিহ্নিত করা অতীব জরুরি। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি "প্রজাতন্ত্রের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্মরন করিয়ে দিয়েছেন "কাদের টাকায় তাদের বেতন হয়"। অন্যদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর একটি বক্তব্যকে কোড করে জনগনের সেবক হিসাবে জনসেবাকে নিশ্চিত করতে তাগিদ দিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই পূর্বধলা উপজেলার একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের একটি ফেইসবুক পোষ্ট সত্য/মিথ্যার আড়ালে নিঃসন্দেহে একটি অশনিসংকেত। যেখানে শহীদমিনার নির্মাণ,বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ,আশ্রায়ন প্রকল্প নির্মাণ,নিয়মিত অর্থ ছাড়ে ঘুস গ্রহন,নির্বাচনী প্রার্থীদের কাছ থেকে নিরাপত্তার কথা বলে উৎকোচ গ্রহনসহ অনেক ঘটনারই চিহ্ন পত্র/পত্রিকায় ছাপা হয়েছে । সেখানে সেগুলো ভেবে দেখার সুযোগে "জনতা শুধুই প্রতারিত হয়েছে" কিন্তু পরিত্রানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনিচ্ছা অথবা শাসিতের প্রতি শাসকের বর্বরতা/অবজ্ঞায় জনপ্রশাসনের জনসেবা শুধুই নির্বাসিতই হয়েছে।
তাইতো আজ সেই বৃটিশ/পাকিস্তানিদের প্রমানীত সত্যই প্রতিস্থাপিত হচ্ছে "একটি জাতিকে ধ্বংস করতে হলে তার শিক্ষা ব্যাবস্থাকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে দাও"। কিন্তু কোন আবেগঘন প্রচারনায় পূর্বধলার সমাজ,রাষ্ট্রে যদি এই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনে তাহলে অবশ্যই সাধুবাদ জানালাম । "জয় হউক মেহনতী মানুষের"।
লেখক: মোঃ এমদাদুল হক বাবুল, প্রভাষক,ইতিহাস বিভাগ,পূর্বধলা সরকারি কলেজ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন